স্কেল ও কির


গিটার বা যে কোন যন্ত্র শিখতে হলে প্রথমেই নোট কর্ড স্কেল সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন গান গাইতে গেলেও ধারণাগুলো থাকা দরকার পাঠে আমি সহজ কথায় বিষয়গুলো বোঝানোর চেষ্টা করব

নোট: আমরা সবাই জানি কোন জিনিশ কাঁপলে তা থেকে শব্দ তৈরী হয়।  জিনিশটি কত দ্রুত কাঁপছে বা কম্পাংক কত (প্রতি সেকেন্ড কাঁপার হার) তার উপর নির্ভর করে শব্দটি কতটা তীক্ষ্ণ। প্রতিটি বাদ্যযন্ত্রেই কোন উপায়ে (আঘাত করে বা বায়ু প্রবেশ করিয়ে) শব্দ তৈরী করা হয়। নোট বা স্বর হচ্ছে একটি বিশেষ কম্পাংক (যা গুণীজনেরা আগে থেকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন) হারমোনিয়াম বা কিবোর্ডের প্রতিটি চাবিতে (বা রিডে) এক একটি নোট থাকে। গিটারে প্রতিটি তারের প্রতিটি ফ্রেটে একটি নোট থাকে।

সব কম্পাংককে মাত্র ১২ টি নোট দিয়ে প্রকাশ করা হয়। ১২ টি নোটকে আবার মনে রাখার সুবিধার জন্য ৭টি ইংরেজী অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয়। নোটের চেয়ে অক্ষরের সংখ্যা কম বলে বাড়তি নোটগুলোকে # (শার্প) b (ছোট হাতের বি এর মতো, কিন্তু বলা হয় ফ্ল্যাট) দিয়ে বোঝানো হয়। তার মানে বারোটি নোটের নাম হলো-

C, C# (বা Db), D, D# (বা Eb), E, F, F# (বা Gb), G, G# (বা Ab), A, A# (বা Bb), এবং B

প্রথাগতভাবে, কেবল C, C#, D, Eb, E, F, F#, G, G#, A, Bb B এই নামগুলি ব্যবহৃত হয়।  B এর পরে আবার C থেকে শুরু হবে এবং চক্রাকারে চলতে থাকবে।  তবে C এর কম্পাংক প্রথমটার  দ্বিগুণ।  B E এর কোন শার্প হয় না এবং C F এর কোন ফ্ল্যাট হয় না।

গিটারে যে কোন তারকে যদি আমরা C মনে করি, তবে তারটি খোলা বাজালে তা C নোট হবে। প্রথম ফ্রেটে আঙুল দিয়ে বাজালে তা C# হবে, দ্বিতীয় ফ্রেটে D, এভাবে .. ১২তম ফ্রেট (১৩তম বার) ধরে বাজালে আবার তা C হবে। দুটো C বাজালে অনেকটা একই রকম শোনা যাবে।

কিবোর্ডে যে কোন চাবিকে C ধরে পর পর বাজিয়ে গেলে (কালো সাদা সহ) তা হবে, C#, D, D#, E, .... প্রথম থেকে ১৩তম চাবিতে গেলে আবার C পাওয়া যাবে। দুটো C কে একসাথে চেপে বাজালে অনেকটা একই রকম শোনা যাবে।

কর্ড: একাধিক নোটকে একসাথে বাজানোকে কর্ড বলে। গিটারে একাধিক তার একসাথে বাজিয়ে কর্ড বাজানো হয়। কিবোর্ডে একাধিক কি একসাথে চেপে ধরে কর্ড বাজানো হয়। কোন কোন কি এক সাথে বাজানো হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে কর্ডের বিভিন্ন নাম হয়। যেমন "C মেজর" কর্ড বাজানোর সময় C, E আর G নোটকে এক সাথে বাজানো হয়। "D মেজর" কর্ড বাজানোর সময় D, F# A নোটকে একসাথে বাজানো হয়। শুধু নোট বাজানোর চাইতে কর্ড বাজালে তা গলার সাথে ভাল মিলে যায় বলে গান শুনতে ভাল লাগে। কর্ড কীভাবে গঠন করা হয় কীভাবে বাজানো হয় তা আমরা পরে কোন এক পাঠে বিষদ জানব।

স্কেল: কোন গানে এই বারোটির সব নোটই যে বাজাতে হবে তার কোন কথা নেই। গানের ধরন বা উপযোগিতার উপর নির্ভর করে কেবল বিশেষ কিছু নোট ব্যবহৃত হয়। যেমন- "মেজর স্কেল" এর বেলায় কেবল C, D, E, F, G, A, B (C থেকে শুরু করলে) ব্যবহৃত হয়। স্কেল মেজর, মাইনর, পেন্টাটোনিক ইত্যাদি অনেক হতে পারে। পরে এসব নিয়ে আলোচনা হবে। শুধু এটুকু মনে রাখলে হবে যে, স্কেল হলো ১২ নোট থেকে বাছাই করা কিছু নোটের সংগ্রহ। এই বাছাই করার প্রক্রিয়াটা ভিন্ন ধরনের স্কেলের বেলায় ভিন্ন। বারটি নোটের সবগুলিকে নিয়ে যে স্কেল তাকে ক্রোমাটিক স্কেল বলে। স্কেল সম্পর্কে বিস্তারিত পরে জানব।

গানের কি: স্কেলের পাশাপাশি প্রতিটি গান বা কম্পোজিশনের একটা কি (key) থাকে। তবে সাধারণত কি আর স্কেল এক করে বলা হয়। যেমন, "সি মেজর স্কেল", "ডি মাইনর স্কেল" লক্ষ্য করুননামগুলো একরকম শোনা গেলেও, কর্ড স্কেল কিন্তু এক বিষয় না।

স্কেল কির সম্পর্ক: প্রতিটি স্কেলের একটি শুরু নোট থাকে, সেটিই ওই স্কেলের কি। কোন একটা গান, বিশেষ যখন বাঁধা হয়, তখন তা গানের ধরন বা মর্জির বিচারে বিশেষ স্কেলের হয়। যেমন, অঞ্জন দত্তের বেলা বোস বা ২৪৪১১৩৯ গানটা মেজর স্কেলে গাওয়া। এখন, অঞ্জন দত্ত যখন গানটা গান, তখন তিনি ডি মেজর কর্ড থেকে শুরু করেন। অন্য কথায়, গানটা তিনি "ডি মেজর স্কেলে গান" কারো গলা যদি অত মোটা না হয়, তাহলে সে হয়ত গানটা E বা F থেকে গাইবে। সেক্ষত্রে, আমরা বলব, তিনি গানটা  E বা F মেজর স্কেলে গাচ্ছেন। মোটামুটিভাবে গানের প্রথম কর্ডটা থেকে গানের কি (key) হয়। তবে এটি কোন নিয়ম না। গানের কি (key) কী হবে তা নির্ভর করে গানটিতে কোন কর্ড বা নোটের প্রাধান্য আছে, সেটি যে গানের শুরু হবে তার কোন কথা নেই। গলার বা গায়কের পরিবর্তনের জন্য কির হেরফের ঘটে, কিন্তু স্কেল অপরিবর্তিত থাকে। যেমন, বেলাবোসকে কেউ মাইনর স্কেলে গাইতে পারবে না (মানে ঠিক মূল আবেদনটা থাকবে না) কোন গানকে এক কি থেকে অন্য কিতে নেয়াকে ট্রান্সপোজিশন বলে। বাংলাকর্ড সাইটে যেসব কর্ড আছে তা যে কোন কিতে ট্রান্সপোজ করে নেয়া যায়। ট্রান্সপোজ করার জন্য কর্ড তালিকার নীচে, ট্রান্সপোজ লেখার পাশে "উপরে" বা "নীচে" লিংকে ক্লিক করতে হবে। যেমন- সিতে থাকা কোন গানকে ডি তে নিতে হলে দুই বার "উপরে" লিংকে ক্লিক করতে হবে